religion.mywibes.com
~* ওঁ নম ভগবতে বাসুদেবায় *~
শ্রীমদ্ভগবদগীতা
পঞ্চম অধ্যায়ঃ কর্ম-সন্যাসযোগ শ্লোক ২৯
অর্জুন বললেন- হে কৃষ্ণ, তুমি কর্মত্যাগ করতে বলছ, আবার কর্ম করতেও বলছ। এই দুইটির মধ্যে যেটি আমার পক্ষে মঙ্গলজনক হবে সেটি বল।১ শ্রীকৃষ্ণ বললেন- কর্মত্যাগ ও কর্মযোগ দুটিই মুক্তিজনক। তবে কর্মত্যাগ অপেক্ষা কর্মযোগই ভালো, অর্থাত্‍ কর্মত্যাগ করা অপেক্ষা কর্ম করাই ভালো২ যাঁর ইচ্ছা দ্বেষ নাই কিন্তু যিনি কর্ম করেন, তিনিই কর্মত্যাগীঁ। তিনি সহজেই বন্ধনমুক্ত হন।৩ জ্ঞান ও কর্ম এক নয়- এটি অজ্ঞান ব্যক্তিদের কথা। প্রকৃতপক্ষে একটি দ্বারা দুইটির ফল লাভ করা যায়।৪ কর্ম দ্বারা যা লাভ করা যায়, জ্ঞানেও তা লাভ করা যায়। তত্ত্বদর্শী ব্যক্তি জ্ঞান ও কর্মকে এক বলেই মনে করেন।৫ কর্ম না করলে জ্ঞান লাভ করা যায় না। কর্মী কর্ম করেই ঈশ্বর লাভ করে থাকে।৬ জিতেন্দ্রিয়, শুদ্ধচিত্ত, আত্মজ্ঞানী ব্যক্তি কর্ম করেন, কিন্তু কর্মে লিপ্ত হন না।৭ \"আমি কর্ম করি\"- এই কথা কর্মযোগে মুক্ত, তত্ত্বদর্শী জ্ঞানী ব্যক্তি ভাবেন না।৮ জ্ঞানী ব্যক্তি উন্মেষ নিমেষ প্রভৃতি সমস্ত কর্মই ইন্দ্রিয়ের কাজ বলে মনে করেন। তাঁর কর্তৃত্বাভিমান নেই।৯ যিনি ফলাকাঙ্ক্ষা ঈশ্বরে অর্পণ করে কর্ম করেন, তিনি নির্লিপ্ত ও নিষ্পাপ হন।১০ ফলত্যাগী কর্মযোগী মন আদি ইন্দ্রিয় দ্বারা আত্মশুদ্ধি লাভ করার জন্যই কর্ম করে।১১ ফলত্যাগী কর্মযোগী প্রকৃত শান্তি লাভ করেন। ফলাসক্ত কর্মী বদ্ধ হয়।১২ ফলত্যাগী কর্মী নবদ্বারযুক্ত দেহে বাস করেন। তিনি নিজেও কর্ম করেন না, অন্যকে দিয়েও কর্ম করান না।১৩ প্রকৃতি মানুষকে প্রবৃত্ত করে। ঈশ্বর কর্ম, কর্তৃত্ব বা কর্মফল কিছুই সৃষ্টি করেন না।১৪ ঈশ্বর কারও পাপ-পুণ্য গ্রহণ করেন না। অজ্ঞানতা দ্বারা জ্ঞান আচ্ছন্ন থাকে। তাই জীব মোহগ্রস্ত হয়।১৫ আত্মজ্ঞানের দ্বারা অজ্ঞনতা দূর হয়, সেই ব্যক্তিই পরমতত্ত্ব জানতে পারে।১৬ যার মনপ্রাণ আত্মজ্ঞানে নিষ্পাপ, সেই ব্যক্তি মুক্ত।১৭ আত্মজ্ঞানী ব্যক্তি ব্রাহ্মণে-চণ্ডালে, হাতিতে-কুকুরে সমান জ্ঞান করেন।১৮ সমজ্ঞানী ব্যক্তি সংসার জয় করে থাকেন। ব্রহ্মকে জেনে তিনি ব্রহ্মভাব প্রাপ্ত হন।১৯ ব্রহ্মজ্ঞানী ব্যক্তি কখনও ইষ্টে তুষ্ট বা অনিষ্টে রুষ্ট হন না।২০ ব্রহ্মজ্ঞানীর মন ইন্দ্রিয় বিষয়ে অনাসক্ত। মৃত্যুর পর তিনি অনন্ত সুখ লাভ করেন।২১ বিষয় ভোগে যে সুখ, তা অনিত্য ও দুঃখের কারণ। জ্ঞানী ব্যক্তি বিষয় সুখে তৃপ্ত থাকেন না।২২ যিনি জিতেন্দ্রিয় তিনি মুক্তযোগী। তিনি সর্বদা সুখে থাকেন।২৩ আত্মজ্ঞানী ব্যক্তি অন্তরে সুখী হয়। তিনি ব্রহ্মে নির্বান লাভ করে থাকেন।২৪ জিতেন্দ্রিয় কর্মযোগী নিষ্পাপ, দ্বিধাহীন ও সকলের হিতসাধনে রত থাকেন। তিনি সর্বদাই মুক্ত।২৫ জিতেন্দ্রিয় আত্মজ্ঞানী ব্যক্তি নির্বান লাভ করে থাকেন।২৬ জিতেন্দ্রিয় আত্মজ্ঞানী বাহ্য চিন্তা দূর করে ভ্রুমধ্যে দৃষ্টিস্থাপন করতঃ প্রণায়ামের দ্বারা মোক্ষলাভের জন্য নিবিষ্ট হন।২৭-২৮ হে অর্জুন, আমি যজ্ঞেশ্বর, আমি যোগেশ্বর, আমিই মহান ঈশ্বর, আমি জীবের বন্ধু- এটি জেনে জীব শান্তি লাভ করে।২৯
  Home
Log in



XtGem Forum catalog