Old school Easter eggs.
religion.mywibes.com
~* ওঁ নম ভগবতে বাসুদেবায় *~
শ্রীমদ্ভগবদগীতা
নবম অধ্যায়ঃ রাজবিদ্যা-রাজগুহ্যযোগ শ্লোকঃ ৩৪
শ্রীকৃষ্ণ বললেন- হে অর্জুন, আমি বিজ্ঞানের সাথে ঈশ্বর বিষয়ক জ্ঞানের কথা বলছি। এটি জানলে তুমি হিংসাশূন্য হবে এবং সংসার দুঃখ হতে মুক্তি পাবে।১ এই জ্ঞানের নাম রাজবিদ্যা। এটি পবিত্র, অক্ষয় ও অতি গোপনীয়। এটি অপরোক্ষ ও সখদায়ক।২ যে ব্যক্তি এই জ্ঞান বিষয়ে শ্রদ্ধাহীন, সে আমাকে পায় না। তিনি মৃত্যুময় এই সংসারে বারবার যাতায়াত করেন।৩ আমি অব্যক্তরূপে বিশ্ব ব্যাপিয়া আছি। ভূতগণ আমাতে অবস্থিত আছে কিন্তু আমি ভূতগণে অবস্থিত নই।৪ আমার ঐশ্বরিক যোগ দেখ। আমি ভূতগণের ধারক ও পালক। কিন্তু আমি ভূতগণে অবস্থিত নই।৫ সর্বগামী বাতাস যেমন আকাশে অবস্থিত সেইরূপ সৃষ্টি ও সৃষ্ট প্রাণীরা আমাতেই অবস্থিত থাকে।৬ প্রলয়কালে ভূতগণ প্রকৃতিতে লয়প্রাপ্ত হয়। কল্পের আরম্ভে আমি তাদেরকে আবার সৃষ্টি করি।৭ আমি আমার মায়া দ্বারাই কর্মাধীন জীবগণকে বার বার সৃষ্টি করি।৮ হে অর্জুন, আমি অনাসক্ত হয়ে সৃষ্টি করি। এই জন্য আমার কর্মে বন্ধন ঘটে না।৯ হে অর্জুন, প্রকৃতিই এই বিশ্বচরাচর সৃষ্টি করে থাকে। তাই বার বার সৃষ্টি হয়।১০ আমি যে মহেশ্বর তা মূর্খ ব্যক্তিরা বুজতে পারে না। বুজতে পারে না বলেই সে নবরূপধারী আমাকে তুচ্ছ বোধ করে।১১ মূর্খ ব্যক্তি আসুরী প্রকৃতির বশবর্তী হয়ে এইরূপ করে। তার আশা, কর্ম ও জ্ঞান সবই বৃথা হয়। তার চিত্ত বিক্ষিপ্ত থাকে।১২ মহাপুরুষগণ দৈবী প্রকৃতির বশে অনন্যচিত্ত হয়ে থাকেন। তাঁরা আমাকে সনাতন জেনে একমনে আমারই ভজনা করেন।১৩ তাঁরা নিয়ম, যত্ন ও প্রণাম করে প্রতিদিন ভক্তির সাথে আমার ভজনা করেন।১৪ কেউ জ্ঞানযজ্ঞে আমার ভজনা করে। কেউ কেউ আবার নানাভাবে আমার উপাসনা করে।১৫ আমি ক্রত, আমি যজ্ঞ, আমি মন্ত্র, আমি স্বধা, আমি অগ্নি, আমি হোম, আমিই ঘৃত। তুমি এটি জেনে রেখ।১৬ আমি জগতের পিতামাতা। আমি কর্মের ফলদাতা। আমি পবিত্র ওঙ্কার। আমি পিতামহ। আমি বিধাতা।১৭ আমি প্রভু, আমি সাক্ষী, আমি গতি, আমি ভর্তা, আমি প্রভা ও প্রলয়ের স্থান। আমি সবকিছুর কারণ।১৮ হে আর্জুন, আমি তাপ দান করি, আমি জল বর্ষণ করি, আমি স্থূল ও সূক্ষ্ম, আমি জীবের জন্ম এবং আমিই জীবের মৃত্যু।১৯ সোমপায়ী ব্যক্তি যজ্ঞ করে স্বর্গসুখ লাভ করতে চায়। সে ইন্দ্রলোকে গিয়ে দেবভোগ্য লাভ করে।২০ পুণ্য শেষ হলে ঈদৃশ ব্যক্তির সুখভোগও শেষ হয়। এভাবে সকামী ব্যক্তি বার বার সংসারে জন্মগ্রহণ করে আর মারা যায়।২১ যে ব্যক্তি এক মনে আমার ভজনা করে আমি তার যোগক্ষেম বহন করি।২২ হে অর্জুন, যে ব্যক্তি ভক্তির সাথে অন্য দেবতার পূজা করে সেই ব্যক্তিও বিধিহীনভাবে আমারই ভজনা করে।২৩ আমি সর্বযজ্ঞের ভোক্তা ও কর্মের ফলদাতা। মূর্খ ব্যক্তি তা না জেনে বার বার সংসারে ঘুরে থাকে।২৪ আন্য দেবতাকে পূজা করে স্বর্গ পাওয়া যায়। শ্রাদ্ধ করে পিতৃলোক পাওয়া যায়, ভূতগণের পূজা করে ভূতলোক পাওয়া যায়। কিন্তু আমার ভক্ত আমাকে পায়।২৫ পত্র, পুষ্প, ফল, জল ভক্তির সাথে আমাকে অর্পণ করলে আমি সেই সকল গ্রহণ করি।২৬ হে অর্জুন, তপস্যা, কর্ম, হোম, খাদ্য, দান- সমস্তই আমাতে অর্পণ কর।২৭ তাতে তুমি শুভাশুভ কর্মফল হতে মুক্ত হবে এবং সন্যাসযোগের দ্বারা আমাকে পাবে।২৮ আমার কাছে প্রিয়-অপ্রিয় নেই। আমার কাছে সকলেই সমান। যে আমার ভজনা করে আমি তার এবং সেও আমার।২৯ দুষ্ট ব্যক্তিও যদি এক মনে আমার পূজা করে তবে তার কর্মনিষ্ঠা সাধু হয় এবং সে সজ্জন বলে পরিগণিত হয়।৩০ সে ধর্মপ্রাণ হয়ে চিরদিন সুখে থাকে। হে অর্জুন, আমার ভক্ত কখনও নাশপ্রাপ্ত হয় না।৩১ বৈশ, শূদ্র, নারী এমনকি হীনজাতির লোকও আমার ভজনা ক\'রে শ্রেষ্ঠগতি লাভ করে।৩২ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও সজ্জন ব্যক্তি আমাকে পাবে। অতএব, হে অর্জন, তুমি সর্বদা একমনে আমার ভজনা কর।৩৩ হে অর্জুন, তুমি ভক্তির সাথে আমাকে নমস্কার কর, তুমি নিশ্চয়ই আমাকে পাবে।৩৪
  Home
Log in